You are currently viewing BdJSO Introduction and Preliminary Preparation

বিডিজেএসও কী?

বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড হল এদেশের হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের একটি মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতা। বিশ্বের হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের একটি অন্যতম জনপ্রিয় মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতা হল আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড (আইজেএসও)। ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ দল গঠনের উদ্দেশ্যে আয়োজন করে আসছে বিডিজেএসও। এরই মধ্যে এর পাঁচটি বছরে দেশজুড়ে পাঁচটি আয়োজন সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই অল্প সময়ের মধ্যেই অন্যান্য অলিম্পিয়াডের তুলনায় বাংলাদেশে এটি অনেক বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রথমে দেশের কয়েকটি জেলায় আঞ্চলিক পর্ব হয়, সেখান থেকে বিজয়ীদের নিয়ে ঢাকায় হয় জাতীয় পর্ব। জাতীয় পর্বের বিজয়ীদের নিয়ে ঢাকায় হয় ক্যাম্প। কয়েক দফা পরীক্ষার মাধ্যমে সবশেষে বাছাই হয় I J SO এর জন্য ৬ সদস্যের বাংলাদেশ দল।

কাদের জন্য BdJSO?

প্রথম চার বছরে BdJSOতে কেবল ৬ষ্ঠ থেকে ১২শ এর শিক্ষার্থীরাই অংশ নিতে পারত। তবে বর্তমানে প্রাইমারি এর কচিকাঁচাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

  • প্রাইমারি গ্রুপ- ৩য় হতে ৫ম ও সমমান
  • জুনিয়র গ্রুপ- ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম ও সমমান
  • সেকেন্ডারি গ্রুপ- ৯ম ও ১০ম ও সমমান
  • স্পেশাল গ্রুপ- ১১শ ও ১২শ ও সমমান (কেবলমাত্র যাদের বয়স নিচের শর্ত মানে)

এখানে উল্লেখ্য যে, BdJSO তে বয়সের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তুমি যে বছর BdJSO দিচ্ছ, ঐ বছরের ৩১ ডিসেম্বর যদি তোমার বয়স ১৬ এর কম হয়, কেবলমাত্র সেই ক্ষেত্রেই তুমি আইজেএসও দলে সুযোগ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। অন্যথায় তুমি অষ্টম-নবম-দশম যে শ্রেনিতেই পড় না কেন, সর্বোচ্চ জাতীয় অলিম্পিয়াডে বিজয়ী হতে পারবে কিন্তু পরবর্তী দল নির্বাচন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।

প্রস্তুতিঃ

তুমি যে ক্লাসেই পড় না কেন, নিচে যে বইই সাজেস্ট করা হোক না কেন, প্রথমেই মনে রাখবে—অলিম্পিয়াডের পড়াশোনার স্টাইল আর ক্লাসের পড়াশোনার স্টাইলের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। অলিম্পিয়াডে পড়াশোনার কোন শর্টকাট নেই। তোমাকে কোন টপিক পড়তে বলা হলে ক্লাসের পড়ার জন্য তুমি কয়েকটা প্রশ্ন পড়েই ভালো করতে পার, কিছু জিনিস মুখস্থ করলেও চলতে পারে। কিন্তু অলিম্পিয়াডে মুখস্থের কোন স্থান নেই। অলিম্পিয়াডে ভালো করার জন্য তুমি যাই পড় না কেন, প্রত্যেকটা লাইন পড়ে নিজেকে প্রশ্ন করবে- “কেন?” যদি তুমি মনে মনে এর উত্তর দিতে পার, বুঝবে তুমি পুরো জিনিসটা বুঝতে পেরেছ। না বুঝে তিন- চারটা বই খতম দেওয়ার চেয়ে একটা বই ভালো করে বুঝে পড়া অনেক বেশি কাজে আসবে।

প্রাইমারিঃ

তুমি প্রথমেই নিজের ক্লাসের বিজ্ঞান বইটা ভালো করে পড়বে। পড়া মানে দাঁড়ি কমাসহ সব মুখস্থ নয়, লাইন বাই লাইন বুঝে পড়া। তারপর অনুশীলনীর প্রশ্নগুলো নিজ নিজে উত্তর করার চেষ্টা করবে। খবরদার, গাইড বই ভুলেও আগে ধরবে না! বইয়ে দেওয়া এক্সপেরিমেন্টগুলো নিজে নিজে করে দেখবে, চাইলে বড় কারো হেল্প নিতে পারো। ছোটবেলা থেকে এক্সপেরিমেন্ট করার অভ্যাস থাকলে বড় হয়ে অনেক আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে ভালো করতে পারবে।

উপরের নিয়ম মেনে ঠিকঠাক পরলে তোমার আঞ্চলিকে পর্বে ভালো করতে পারার কথা। এরপর তুমি এক ক্লাস উপরের বই পড়তে পারো। সেটাও উপরের বলা নিয়ম মেনেই, তাড়াহুড়ো করে নয়। সেটাও হয়ে গেলে দুই ক্লাস উপরের বই ধরতে পারো। এই পর্যায়ে চলে আসতে পারলে তোমার জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পেয়ে যাওয়া উচিত।

জুনিওরঃ

আইজেএসও তে যাওয়ার স্বপ্ন থাকলে জুনিয়র ক্যাটাগরি থেকেই প্রস্তুতি শুরু করা উচিত।

প্রথমেই শুরুতে বলা নিয়ম মেনে তোমার ক্লাসের বিজ্ঞান বইটা ভালো করে পড়ে ফেলবে। তারপর এক ক্লাস উপরের বই ধরতে পারো। গণিতে ভালো হতে হবে। আমি বলছি না তোমার উপরের ক্লাসের গণিত বই শেষ করে ফেলতে হবে। বরং গ্রাফ সম্পর্কে কিছু সাধারন ধারণা রাখতে পারলে ভালো। এছাড়া নবম শ্রেণির সাধারণ গণিত থেকে জ্যামিতি আর উচ্চতর গণিতের ঘন জ্যামিতি পরলে ভালো।

যারা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছ, তারা নবম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞানের বল, গতি, স্থির ও চল তড়িতের অধ্যায়গুলো পড়তে পারো। রসায়নে পড়বে stoichiometry এর অধ্যায়টা। এই অধ্যায়গুলো যদি পড়, অবশ্যই গাণিতিক সমস্যা কিছু চর্চা করবে। নাহলে কয়েকদিন পর সবই ভুলে যাবে।

সেকেন্ডারি

এই ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা সবচেয়ে বেশি। আমরা এর প্রস্তুতিকে তাই দুই ভাগে ভাগ করব।

ধাপ ১।

যেভাবে প্রথমে বলা আছে, আগে নবম-দশম শ্রেণির তিনটা বিজ্ঞান বই পড়া ফরয। প্রত্যেকটা অধ্যায় থেকে যত পারা যায়, গাণিতিক সমস্যা সমাধান করবে। গণিত সরাসরি লাগবে না কিন্তু গণিতের ধারণা লাগবে। ফাংশন, ঘন জ্যামিতি, জ্যামিতি, ত্রিকোণমিতির সাধারণ ধারণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

(অনেকে টেস্ট পেপার থেকে পদার্থবিজ্ঞানের সমস্যা সমাধান করে। কিন্তু আমি বলব এর চাইতে ভালো রিসোর্সএ বেশি সময় ব্যয় করতে। তুমি যদি এই লেখা পড়ার আগেই টেস্ট পেপার সল্ভ করা শুরু করে দিয়ে থাক, তাহলে ঠিক আছে, কঠিন অঙ্কগুলো সল্ভ করে রেখে দাও, বেশি সময় দিও না। কিন্তু টেস্ট পেপার না কিনে থাকলে ভালো, নিচের লেখা পড়, টেস্ট পেপার সল্ভ করা লাগবে না)

মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের পদার্থবিজ্ঞানের প্রথম পাঠ বইটা অবশ্যই পড়ে নিবে। যতগুলো প্রশ্ন দেওয়া আছে সব সমাধান করবে। দেখা আলো না দেখা রূপ তাঁর আরও একটি চমৎকার বই। আলোকবিজ্ঞান সংক্রান্ত জিনিষগুলো সহজ ভাষায় এখানে বলা আছে।

আইজেএসও সিলেবাসে ক্যালকুলাস অন্তর্ভুক্ত নয়। কিন্তু ক্যালকুলাস এর ABCD না শিখলে আসলে তুমি পদার্থবিজ্ঞান শিখতেই পারবে না। জাফর ইকবাল স্যার এর “সহজ ক্যালকুলাস” বইটা থেকে সাধারন ধারণা টুকু নেওয়া যায়, যেটা দিয়ে তুমি উচ্চতর বইগুলো পড়া শুরু করতে পারো। বিডিজেএসও এর কিছু প্রশ্ন, সেটা হতে পারে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বা জীববিজ্ঞান- গ্রাফ এনালাইসিস থাকবেই। তাতে ক্যালকুলাস না লাগলেও ইন্টিগ্রেশন আর ডিফারেনশিয়াশন এর সাধারন ধারণা প্রয়োজন- যেটা এই বই থেকে পেতে পারো।

রসায়নে সবচেয়ে জোর দেবে stoichiometry তে। ঐকিক নিয়মে বেশ কিছু অংক পাবে এখানে। সূত্র মুখস্থ করে অংক করার চেয়ে ঐকিক নিয়মে ধাপে ধাপে অংক করার চেষ্টা করবে প্রথমে। এককগুলো কিভাবে আসছে, বোঝার চেষ্টা করবে। আর মূল অলিম্পিয়াডে সব প্রশ্নের এককসহ উত্তর দেবে। জৈব রসায়ন আর তড়িৎ রসায়ন এর অধ্যায় গুলতে বিক্রিয়া মুখস্থ করবে না। সাধারণ ধারণা থাকলেই যথেষ্ট।

জীববিজ্ঞানকে অনেকে মনে করে মুখস্থের বিষয়। এটা কিন্তু একদম ঠিক নয়। এখানে যা পড়বে, বুঝে পড়বে। বিশেষ করে কোষ অঙ্গাণু, energetics, cell division, digestion and digestive system, পরিবহন, রেচন, শ্বসন, উদ্ভিদ প্রজনন, বংশগতি এগুলো কিভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে বুঝে পড়বে। কোন প্রকারভেদ, শ্রেনিবিন্যাস মুখস্থ করবে না।

বিডিজেএসও এর পুরাতন প্রশ্নগুলো সল্ভ করবে। এখানে লিঙ্ক দেওয়া আছে। http://bdjso.org/questions/

তুমি যদি এই পর্যন্ত পড়াশোনা নির্বিঘ্নে এবং কারও তেমন সাহায্য ছাড়াই করে আসতে পারো তাহলে আমার মনে হয়, এরপর তোমার আমার দ্বিতীয় পোস্ট Aiming at I J SO অনুযায়ী পরবর্তী ধাপ শুরু করা উচিৎ। কারন আইজেএসও লেভেলের প্রব্লেম সল্ভের জন্য এই রিসোর্সগুলোই সবচেয়ে ভালো এবং প্রতিবছর বাংলাদেশ দল এই বইগুলো থেকেই প্রস্তুতি নেয়।

তোমার হাতের কাছে যদি ইংরেজি বইগুলো না থাকে অথবা যোগাড় করতে সময় লাগে অথবা PDF পড়তে সমস্যা হয় অথবা কোন কারনে ইংরেজি বই পড়ে বুঝতে প্রথম দিকে সমস্যা হয়, তাহলে নিচের লেখা অনুযায়ী কোন বিশেষ টপিক পড়তে পারো বা প্রাথমিক পড়া শুরু করতে পারো। তবে মনে রাখবে,প্্রথমে পড়তে কষ্ট হলেও ইংরেজি বইগুলোতেই কিন্তু সবকিছু সহজ ভাষায় লেখা আছে।

ধাপ ২।

পদার্থবিজ্ঞান

অক্ষরপত্র প্রকাশনীর উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান বইটা প্রব্লেম সল্ভিং এর জন্য মোটামুটি ভালো। এই বই এর প্রথম পত্র থেকে পড়বে এবং গাণিতিক সমস্যা সল্ভ করবেঃ

পরিমাপের ত্রুটি, পরিমাপ্য
রাশির শুদ্ধতর মান, দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ ভেক্টর( ভেক্টর অপারেটর বাদে), গতিবিদ্যা, নিউটনের গতিসূত্র, ভরবেগের নিত্যতা, ঘর্ষণ বল, কেন্দ্রমুখি বল, রাস্তার ব্যাংকিং, পঞ্চম অধ্যায়ঃ কাজ, শক্তি ও ক্ষমতা, ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ(জটিল ইন্টিগ্রেশন পড়ার দরকার নাই), হুকের সুত্র ও স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক, অষ্টম অধ্যায়ঃ পর্যাবৃত্ত গতি(অন্তরক সমীকরণ বাদে), নবম অধ্যায়ঃ তরঙ্গ( বীট এর আগ পর্যন্ত), আদর্শ গ্যাস সমীকরণ, p-V diagram.

দ্বিতীয় পত্র থেকে পরবেঃ

প্রথম অধ্যায়ঃ তাপগতিবিদ্যা, দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ স্থির তড়িৎ (গাউসের সূত্র বাদে), তৃতীয় অধ্যায়ঃ চল তড়িৎ, গতিশীল চার্জের ওপর চৌম্বক বল, হল প্রভাব ও হল বিভব, তড়িৎবাহি পরিবাহির ওপর বল, তাড়িতচুম্বকীয় আবেশ, ফ্যারাডের সূত্র, লেঞ্জের সূত্র, জেনারেটর, ডায়নামো, ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ জামিতিক আলোকবিজ্ঞান(অনুবিক্ষন, দুরবিন, বর্ণালি বাদে)।

রসায়নঃ

আগেই বলে রাখছি- জৈব রসায়ন আইজেএসও সিলেবাসে থাকে না। তাই অযথা এর পেছনে সময় দিবে না।উচ্চ মাধ্যমিক এ হাজারি ও নাগ স্যারের বই দুটি থেকে বেসিক ধারণা নিতে পারঃ

১ম পত্রঃ ২য় অধ্যায়ঃ আয়নিক যৌগের দ্রাব্যতা ও দ্রাব্যতা গুনফল, দ্রবণীয়তার শর্ত, চতুর্থ অধ্যায়ঃ বিক্রিয়ায় হার সূত্র, সক্রিয়ন শক্তি, সাম্যাবস্থা, লা শাতেলিয়ের নীতি, ভরক্রিয়া সূত্র,
সাম্যধ্রুবক, বিয়োজন ধ্রুবক, পিএইচ, বাফার, বন্ধন শক্তি ও বিক্রিয়া তাপ, লাভয়সিয়ে ও হেসের সূত্র।

২য় পত্রঃ ১ম অধ্যায়ঃ গ্যাস সূত্রসমূহ, এসিড ও ক্ষারের মতবাদসমূহ, ৩য় অধ্যায়ঃ stoichimetry(শুরু থেকে নির্দেশকের ভুমিকা পর্যন্ত), চতুর্থ অধ্যায়ঃ ফ্যারাডের তড়িৎ বিশ্লেষণের সূত্র।

যাই পড় না কেন গাণিতিক সমস্যা সাথে সাথে সল্ভ করে নিবে। নাহলে ঐ পড়া কোন কাজেই আসবে না।

জীববিজ্ঞান

জীববিজ্ঞান মুখস্থের কিছু নাই। তাই ভয় পাওয়ার দরকার নাই। উচ্চ মাধ্যমিকের বই উদ্ভিদবিজ্ঞানের জন্য আবুল হাসান স্যারের বই থেকে নিচের জিনিষগুলো পরবেঃ

১ম ও ২য় অধ্যায়ঃ সম্পূর্ণ, ৯ম অধ্যায়ঃ প্রস্বেদন, সালোকসংশ্লেষণ, শ্বসন (ক্যালভিন চক্র, গ্লাইকোলাইসিস, ক্রেবস চক্র, ইলেক্ত্রন প্রবাহ এর ধাপ পড়ার দরকার নাই, বেসিক ধারণা নিলেই হল), দশম অধ্যায়ঃ আবৃতবীজী উদ্ভিদের প্রজনন

প্রাণিবিদ্যার ক্ষেত্রে গাজী আজমল স্যারের বই থেকে পড়বে-

৩য়, চতুর্থ,পঞ্চম ও ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ (সম্পূর্ণ) একাদশ অধ্যায়ঃ জিনতত্ত্ব (এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ)

স্পেশালঃ

সেকেন্ডারি আর এই ক্যাটাগরির জন্য আসলে একই প্রশ্ন করা হয় কিন্তু এই ক্যাটাগরির কাছে প্রত্যাশা থাকে অনেক বেশি। এই ক্যাটাগরির জন্য Aiming at I J SO পোস্টটি পড়।

কিছু বিশেষ কথাঃ

প্রত্যেকেরই পদার্থ, রসায়ন বা জীববিজ্ঞানের যেকোনো একটি বেশি ভালো লাগে। এটা খুবই স্বাভাবিক। তুমি ঐ বিষয়ে বেশি সময় দিতেই পারো। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে বাকি দুই বিষয়ে তোমার অবস্থা খারাপ থাকবে। BdJSO তে ভালো করতে হলে অন্তত দুটি বিষয়ে খুবই ভালো হতে হবে। তিনটিতেই ভালো হতে পারলে আরও ভালো। 
ছোটদের জন্য বলি, BdJSO বা  I J SO এর বয়সসীমার কারনে এটি আসলে ছোটদেরই অলিম্পিয়াড। তুমি এখানে যত ছোট থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করবে, ততই তোমার জন্য মঙ্গল। দেশের অন্যান্য অলিম্পিয়াডে সাধারনত দশম শ্রেণি বা কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাঠান হয় তার কারন সেখানে বয়সসীমা বেশি। কিন্তু I J SO তে চেষ্টা করা হয় নবম বা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী দিয়েই দল গঠনের। ছোটরা এই সুযোগটা কাজে লাগাও।  কলেজ তথা বিশেষ ক্যাটাগরি এখানে আসলেই ‘বিশেষ’। বিশেষ ক্যাটাগরিতে তাই পুরস্কার দেওয়াও হয় খুবই কম। অনেক সময় উপযুক্ত ফলাফল না পাওয়া গেলে আঞ্চলিক পর্বে বিশেষ ক্যাটাগরিতে কোন পুরস্কারই দেওয়া হয় না। তাই বড়দের বলছি, তোমার প্রতিযোগিতা হবে অন্যদের সঙ্গে নয়, প্রশ্নের সঙ্গে।
বেশি বেশি প্রব্লেম সল্ভিং খুবই দরকার। তোমার BDJSO এর প্রশ্নগুলো সল্ভ করতে সহজ লাগলে আর দেরি না করে আইজেএসও প্রশ্ন সল্ভ করা শুরু কর। শুরুটা করতে পারো ২০১৮ সালের প্রশ্ন দিয়ে। এরপর ২০১৬ চেষ্টা করে দেখতে পারো। ২০১৭, ২০১৫ এগুলো ধীরে ধীরে সল্ভ করতে থাক। ঠিক কোন জায়গায় আটকে যাচ্ছ সেটা খুজে বের করো। ঐ প্রশ্নের জন্য যে থিওরি পড়া দরকার সেটাতে বেশি সময় দাও। দেখবে, তোমার দুর্বলতা কেটে যাচ্ছে।
আইজেএসও প্রশ্নের লিঙ্কঃ http://www.ijsoweb.org/downloads

কখন BdJSO এর রাউন্ডগুলো অনুষ্ঠিত হয়?

  • BdJSO গার্লস ক্যাম্প(কেবল মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে)- এপ্রিলের শুরুর দিকে
  • BdJSO হাই পারফরমান্স ক্যাম্প (পূর্ববর্তী BdJSO এ ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে)-এপ্রিলের শুরুর দিকে
  • রেজিস্ট্রেশন- জুলাই এর শেষের দিকে
  • আঞ্চলিক পর্ব- জুলাই এর শেষ এবং আগস্টের শুরুর দিক
  • ই- অলিম্পিয়াড- সকল আঞ্চলিক অলিম্পিয়াড শেষ হওয়ার দুই এক দিনের মধ্যেই
  • জাতীয় পর্ব- আগস্টের মাঝামাঝি
  • জাতীয় ক্যাম্প(আবাসিক)- আগস্টের শেষ অথবা সেপ্টেম্বরের শুরু
  • প্রাথমিক দল গঠন পরীক্ষা- জাতীয় ক্যাম্পের মধ্যেই
  • এক্সটেনশন ক্যাম্পঃ প্রাথমিক দল(১৩ জন) কে নিয়ে- জাতীয় ক্যাম্পের কয়েকদিনের মধ্যেই
  • I J SO দল ঘোষণা- অক্টোবরের শুরুর দিকে
  • I J SO ক্যাম্প- দল ঘোষণার পর থেকে
  •  I J SO: 2-12 December এর মধ্যে
তোমরা BdJSO এর অফিশিয়াল পোস্টটাও পড়তে পারো। http://bdjso.org/preparation/
বিজ্ঞানের জগতে তোমাদের পদচারণ শুভ হোক।

-রুবাইয়াত জালাল, আইজেএসও ২০১৭ বাংলাদেশ দলের সদস্য, বিডিজেএসও ২০১৮ ও ২০১৯ একাডেমিক দলের সদস্য এবং APhO ২০১৯ দলের সদস্য